রাব্বি হোসেন নামটা এ দেশের ফুটবলে পরিচিতি পেয়েছে গত মৌসুমেই। বসুন্ধরা কিংস থেকে ধারে ব্রাদার্স ইউনিয়নে খেলেছিলেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তাঁর দল ব্রাদার্স ভালো করতে না পারলেও কমলা জার্সিতে ঠিকই নিজেকে চিনিয়েছিলেন রাব্বি। তাঁর বল প্লে, গতি, গোল করার ক্ষমতা দিয়ে তিনি নিজেকে ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে মেলে ধরেছেন। লিগে করেছেন ৬ গোল, প্রতিটিই নজরকাড়া। নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়ী বাংলাদেশ যুব দলের আক্রমণের প্রাণভোমরা হয়ে দলের সাফল্যে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। বাংলাদেশের চারটি ম্যাচেই রাব্বির পারফরম্যান্স ছিল ভিন্নমাত্রার। কখনো রাইট উইং, কখনো লেফট উইং, কখনো–বা মাঝমাঠ—সর্বত্রই ছিলেন রাব্বি। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ প্রতিযোগিতার অন্যতম সেরা এই ফুটবলার এখন স্বপ্ন দেখছেন, নিজেকে ছাড়িয়ে অনেক দূর নিয়ে যাওয়ার। তিনি স্বপ্ন দেখছেন, দারুণ এক ফুটবল-ক্যারিয়ারের। দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার হয়ে ওঠার স্বপ্নটা তো তাঁর আছেই।

কাল নেপালকে ৪-১ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পর উৎসবের কমতি ছিল না বাংলাদেশ দলে। রাতে হোটেলে ফিরে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘সাফের শিরোপা জয় এখন পর্যন্ত আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত। দেশকে একটা সাফল্য এনে দিতে পেরেছি, এর চেয়ে দারুণ কিছু আর কী হতে পারে?’

ফাইনালে আগের তিন ম্যাচের মতোই রাব্বি ছিলেন দুর্দান্ত। নিজে খেলেছেন, গোটা দলকে খেলিয়েছেন। দারুণ একটি গোলও করেছেন। সর্বশেষ মৌসুমেই গোল করার ক্ষমতাটা দেখিয়েছিলেন মাঠে, কাল কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে সেটি আবারও দেখালেন। ম্যাচে জোড়া গোল করা মিরাজুলের কাটব্যাক ধরে বক্সের ঠিক মাথায় দাঁড়িয়ে এক নেপালি ডিফেন্ডারকে পায়ের কাজে এলোমেলো করে দিয়ে ঠান্ডা মাথায় বলটা গোলে ফেললেন—এমন ঠান্ডা মাথার গোল দেশের ফুটবলে দেখা যায় কালেভদ্রে। যশোরের বেনাপোলে জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাব্বি অবশ্য এ মুহূর্তে পা মাটিতেই রাখতে চান, ‘অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এটাকে পুঁজি করেই এগিয়ে যেতে চাই। নেপালে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, সেটি ভবিষ্যতে আমার কাজে আসবে।’

বল পায়ে যেমন খুশি তেমন করার স্বাধীনতা নাকি কোচ মারুফুল হকই রাব্বিকে দিয়েছিলেন, ‘অনেক সময় কোচরা ড্রিবলিং পছন্দ করেন না। বল পায়ে এলে তা দ্রুত রিলিজ করার নির্দেশ দেন। তবে মারুফুল স্যার এসব করেননি। তিনি আমাকে বলেছিলেন, “রাহুল, (রাব্বির ডাকনাম) তুমি একেবারে তোমার মতো করে খেলো। তোমার যা যা সামর্থ্য আছে, সবটুকু মাঠে উজাড় করে দাও”—এমন নির্দেশ পেয়ে আমি খেলেছি। মাঠে আমার যেকোনো কিছু করার পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল।’

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version