বিক্ষোভ মিছিলে সংঘর্ষ, বাজারে আগুনে শতাধিক দোকানঘর পুড়ে যাওয়ার দুইদিন পরেও থমথমে হয়ে রয়েছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা বাজার।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা বাজারে কবির হোসেনের ছোট দোকানটি বৃহস্পতিবারের পুড়েছে সহিংসতার আগুনে।

শনিবার সেই পুড়ে যাওয়া দোকান থেকে কিছু মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন মি. হোসেন। কিন্তু সেখানে থেকে তেমন কিছু বাঁচাতে পারেনি। এই আগুনে পুড়েছে কয়েক লাখ টাকার মালামাল।

শনিবার দুপুরের পর দীঘিনালা বাজারের সেখানে এখনো থেমে থেমে ধোয়া উড়ছে। এরই মাঝখানে অনেকেই পুড়ে যাওয়া দোকান থেকে তাদের মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।তবে শুধু বাঙালিদের দোকান নয়, পুড়েছে পাহাড়িদের দোকানঘরও।

সুইটি দেওয়ান নামে এক নারী অভিযোগ করেন, বাজারে তাদেরও দোকান ছিল। সেটিও পুড়েছে আগুনে। সেই সাথে বাজারের পাশে থাকা তাদের বাড়িতেও হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।

এখনো দীঘিনালায় থমথমে পরিবেশ রয়েছে।

এমনকি শনিবার বিকেলে যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সেখানে এসে বক্তব্য শুরু করেন, তখনো সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির তৈরি হয়।

দীঘিনালার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার থেকে তিনদিনের অবরোধ চলছে তিন পার্বত্য জেলায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দীঘিনালাসহ পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় চলছে সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল।বৃহস্পতিবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় এখনো বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা দেখা গেছে।এখনো স্বাভাবিক হয়নি দীঘিনালার পরিস্থিতি

শনিবার দুপুরের পর দীঘিনালা বাজারে গিয়ে লারমা স্কয়ারের দোকানগুলো থেকে এখনো ধোয়া উড়তে দেখা যায়।

এরই মাঝখানে অনেকেই নিজ দোকানের মালামাল অবশিষ্ট আছে কী না তা খুঁজে ফিরছিলেন।

কেউ কেউ আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় বাঁশ কিংবা খুঁটি দিয়ে মেরামতের চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ক্ষতিগ্রস্ত লারমা স্কয়ারের দোকানদারদের দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটে যাওয়া এই আগুনে অন্তত একশোর ওপরে দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এই বাজারে আগুনের ঘটনায় পাহাড়ি ও বাঙালী দুই জনগোষ্ঠীর মানুষেরই দোকান পুড়েছে।

দীঘিনালার লারমা স্কয়ার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নিপন চাকমা “এই দোকান করে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করতো। পুড়ে যাওয়ার পর অনেক বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে সবার”।

এই ঘটনার পর এটিতে যতটা না আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার শঙ্কার কথা বলছিলেন দীঘিনালা বাজারে থাকা বাঙালী জনগোষ্ঠীর কেউ কেউ।

দীঘিনালা থানার ওসি নুরুল হক “এই ঘটনায় আমরা প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। সবার সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি। তবে এখনো অনেকের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ আছে”।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version