চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুরা কুমারা দিসানায়েকে যখন ভারত সফরে এসেছিলেন, সেই সময় কেউ অনুমান করতে পারেনি যে মাত্র সাত মাসের মধ্যে তিনি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হবেন।

সফরকালে ভারতের পররাপ্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাত্র ৩% ভোট পেয়েছিলেন অনুরা কুমারা দিসানায়েকে। তবে এইবার নির্বাচনের প্রথম দফায় মি. দিসানায়েকের ঝুলিতে ছিল ৪২.৩১% ভোট এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা পেয়েছিলেন ৩২.৭৬ শতাংশ ভোট। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট গণনা শুরু হয় এবং ৫৫ বছর বয়সী মি. দিসানায়েকেকে জয়ী বলে ঘোষণা করা হয়।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরে অনুরা কুমারা দিসানায়েকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে অভিনন্দন জানান শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় হাইকমিশনার সন্তোষ ঝা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তরফ থেকেও তাকে অভিনন্দন বার্তা জানানো হয়েছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়ে মি. মোদী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন- “ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গিতে শ্রীলঙ্কার একটা বিশেষ স্থান রয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী মোদীর অভিনন্দনের জবাবে শ্রীলঙ্কার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদী, আপনার সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দুই দেশের সহযোগিতা আরও জোরদার করার জন্য আপনার যে প্রতিশ্রুতি, তার পাশে রয়েছি। দুই দেশ এবং সমগ্র অঞ্চলের নাগরিকদের স্বার্থে আমাদের এই সহযোগিতা।’

২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা যখন চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল, তখন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসার এক সরব বিরোধী হিসেবে বিবেচনা করা হতো মি. দিসানায়েকেকে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল একজন নেতা হিসেবে নিজেকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করেছিলেন তিনি। এর ফলে একে একে শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের একটি বড় অংশ তার সমর্থনে এগিয়ে আসেন।

এখন প্রশ্ন হলো বামপন্থী নেতা হিসাবে পরিচিত অনুরা কুমারা দিসানায়েকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হওয়ায় ভারতের উপর কী প্রভাব পড়তে পারে?ষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছিল। পরে সে বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মি. জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে জানিয়েছিলেন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার বিষয়ে দু’জনের মধ্যে ‘সন্তোষজনক’ আলোচনা হয়েছে।

এই বামপন্থী নেতাই এখন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন। গত ২২শে সেপ্টেম্বর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

জনতা ভিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) এবং ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি)-এর জোটের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন তিনি।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version