উচ্চশিক্ষাকে টেকসই করার লক্ষ্যেই চলমান আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য কী এবং কীভাবে ও কার জন্য এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে, উচ্চশিক্ষা নিয়ে ধারাবাহিক লেখার এটি দ্বিতীয় পর্ব। লিখেছেন সৌমিত জয়দ্বীপ

রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও উন্নয়নবাদের মোড়কে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের বিষয়টি একটি আসমুদ্রহিমাচল আকাঙ্ক্ষায় পরিণত হয়েছে। এ জন্যই একে বলা হচ্ছে ‘উচ্চশিক্ষাকাঙ্ক্ষা’। আকাঙ্ক্ষা থাকা উপাদেয়। তবে ভৌত ‘বিশ্ববিদ্যালয়বাজি’র কারসাজিতে দাঁড়ানো বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার চরিত্রটি বাজারকেন্দ্রিক হওয়ায় তা সহজলভ্যতার নেশায় মত্ত অপরিকল্পনা ও অনুৎপাদনশীলতার আস্ফালনমাত্র।

টাকা প্রয়োজনের অধিক ছাপানো যেমন মুদ্রাস্ফীতি ঘটায়, তেমনই টেকসই উচ্চশিক্ষার দর্শনহীনতার বদলে যত্রতত্র বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুললে তা ‘উচ্চশিক্ষাস্ফীতি’ এবং একই সঙ্গে ‘বেকারস্ফীতি’ তৈরি করে। এতে অতি-উৎপাদনে মুদ্রার মতো উচ্চশিক্ষারও মান কমে। উচ্চশিক্ষাকে টেকসই করার লক্ষ্যেই চলমান আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য কী এবং কীভাবে ও কার জন্য এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হবে।

এরপর আসবে উচ্চতর শিক্ষার প্রসঙ্গ। অপ্রিয় হলেও সত্য, উচ্চতর শিক্ষার সর্বজনীনতা বাঞ্ছনীয় নয়। বরং একজন নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য ও প্রয়োজনীয় টেকসই উচ্চশিক্ষার বন্দোবস্তের মাধ্যমে তাঁকে বাজারব্যবস্থার অংশীদারত্ব দিতে হবে। বাজারের দাসত্ব থেকে বেরিয়ে এসে বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারার এটাই বোধ হয় সবচেয়ে উত্তম ‘বটিকা’। সেই ভাবনা থেকেই এ ইশতেহারের প্রস্তাব।

না, এ প্রস্তাব অলৌকিক আকাশকুসুম কল্পনা নয়। এর বাস্তব অস্তিত্ব খোদ বাংলাদেশেই আছে। উদাহরণ চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সশস্ত্র বাহিনীর শিক্ষাকাঠামো।

Share.
Leave A Reply