বেলতলায় চণ্ডীপাঠ ও চণ্ডীপূজার মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার সূচনা হয়েছে শ্রীশ্রী দুর্গাষষ্ঠীর। চণ্ডীপূজায় ছিল নানা রকম ফুল ও ফলের সমারোহ। পূজার সময় বেজেছে ঘণ্টা, কাঁসর, শঙ্খ, ঢাক ও ঢোলের বাদ্য। উলুধ্বনিতেও মুখর হয়ে ওঠে বেলতলা। ধূপ–প্রদীপ হাতে আরতিও করেন পুরোহিতেরা। চণ্ডীপূজা শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তরা অঞ্জলিও প্রদান করেন। সেই সঙ্গে ভক্তরা ঘুরে ঘুরে পূজাও দেখেন।
চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়েই মূলত শুরু হয়েছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার। পূজার এই কদিন ফুলে–ফলে, বাদ্যে, নাচে, ভক্তদের ভিড়ে মুখর থাকবে মণ্ডপগুলো। হবে প্রসাদ বিতরণ।
আজ বৃহস্পতিবার মহাসপ্তমী। আজ সকালে দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন করা হয়। এরপর সপ্তমী বিহিত পূজা হয়ে থাকে।ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গতকাল সকালে দুর্গামণ্ডপের সামনে থাকা বেলতলায় চণ্ডীপাঠ হয়। এই দুর্গামণ্ডপের প্রধান পুরোহিত ধর্মদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ষষ্ঠীর সকালে চণ্ডীপাঠ ও চণ্ডীপূজার পর সন্ধ্যায় হয় বেলতলায় দুর্গাদেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস। তখন দেবীকে আসার জন্য প্রার্থনা করা হয়। প্রার্থনার পরিপ্রেক্ষিতে দেবী ঘটে (পাত্রবিশেষ) এসে অবস্থান নেবেন। পরে সেই ঘট, বেলপাতা, ডালসহ নবপত্রিকা মূল মন্দিরে স্থাপন করা হবে।ঢাকেশ্বরী দুর্গামণ্ডপ সকাল সাড়ে আটটার দিকে খুলে দেওয়া হয়; যদিও তারও আগে থেকেই ভক্ত ও দর্শনার্থীরা পূজামণ্ডপে আসতে থাকেন। তাঁরা এসে মণ্ডপে ভক্তিভরে প্রণতি জানান।
পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেক মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক অবস্থান রয়েছে। মণ্ডপ ঘিরে বসেছে নানা ধরনের খাবারের দোকান।গতকাল দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ি দুর্গাপূজা মণ্ডপে ধর্মীয় গান বাজছিল। সেই গানের তালে তালে নাচছিলেন সাত–আটজন তরুণী। এ ছাড়া অনেকেই প্রতিমার সঙ্গে ছবি তুলছিলেন। কেউ প্রণাম করছিলেন।
গতকাল দুপুরে খামারবাড়ির এই দুর্গাপূজার মণ্ডপে ঘুরতে আসেন উষ্মা দে ও উপমা দে নামের দুই বোন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা উষ্মা দে বলেন, তাঁরা ঢাকাতেই পূজা করবেন। বোন ও বান্ধবীরা মিলে তাই পূজা দেখতে বেরিয়েছেন। উপমা দে বলেন, ভালো লাগার পাশাপাশি এবার একটু খারাপও লাগছে। কারণ, অন্যান্য বছরের মতো জাঁকজমক করে এবার পূজামণ্ডপ সাজানো হয়নি।
২ অক্টোবর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়।