নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা সৈয়দপুর শহিদ নগর এলাকার রাজাকারপুত্র শহিদ রেজার বিরুদ্ধে প্রতারনা মামলায় গ্রেফতারের জন্য ওয়ারেন্ট আদেশ জারি করেছে আদালত। ৬ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত ১ এই আদেশ জারি করেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বিচারক শামীমা শুনানী শেষে এই আদেশ প্রদান করেন।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানার মামলা নং ৩১, যার তারিখ ২২/৮/২৩। যার সি আর মামলা নং ৩০৬/২৩। পিটিশন নং ৩৩৬/২৪।

মামলা সুত্রে, ৪০৬,৪২০,৫০৬ ধারা ফৌজধারী কার্যবিধি ৭৫ ধারা অনুযায়ী গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট জারি করেছে আসামী শহিদ রেজার বিরুদ্ধে আদালত।

এর আগে ১৪ অক্টোবর আসামীকে গ্রেফতারী পরোয়ানার আবেদন জানিয়ে প্রতিবেদন জমাদেন পিবিআই পুলিশের উপ পুলিশ পরিদর্শক মো.আব্দুল আউয়াল। সেই সাথে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তিনি প্রতিবেদন জমাদেন আদালতে।

এজহার সুত্রে জানাযায়, অভিযোগকারি গিয়াস উদ্দিন বলে, প্রতারক অভিযুক্ত আসামী শহিদ রেজার কাছে ব্যবসায়ীক ভাবে লেনদের আমি ১৮ কোটি টাকা পানা হই। আর এই টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে দেই দিচ্ছি বলে নানা ভাবে টালবাহানা করে যাচ্ছে এই প্রতারক। নানা ভাবে ঘুরাতে থাকলে পরে আমি বাধ্য হয়ে প্রতারনা মামলা দায়ের করি। তারই মামলার প্রেক্ষিতে পিবিআই পুলিশ তার সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতারক শহিদ রেজার গ্রেফতারী পরোয়ানা আবেদন জানান। সেই সাথে ঘটনার সত্যতা পাই।

এছাড়া শহিদ রেজা শিল্পপতি পরিচয় দিয়ে গডফাদার শামীম ওসমান ও সাবেক এমপি সেলিম ওসমানের প্রভাব বিস্তার করে বন্দরের কলাগাছিয়া মদনগঞ্জ এলাকায় নানা অপকর্ম চালিয়েছে। আজমেরী ওসমানের পালিত সন্ত্রাসী পিজা শামিমের মাধ্যমে মামলার বাদি গিয়াস উদ্দিনকে পাওনা টাকা না দিয়ে তাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি প্রদান করে। সেই সাথে আজমেরী ওসমানের গুন্ডাবাহিনী দিয়ে তার উপর নানা ভাবে অত্যাচার চালান। শহিদ রেজাকে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানা উল্লা সানু শেল্টার দিতেন। তিনিও ওসমান পরিবারের অন্যতম দোসর হিসেবে পরিচিত।

স্থানীয়রা জানান, আজমেরীয় ওসমানের গুন্ডবাহিনী নিয়ে শহিদ রেজা গোগনগর সৈয়দপুরে,বন্দরের মদনগঞ্জ এলাকায় আধিপত্য তৈরী করে। বিশেষ করে মদনগঞ্জ কলাগাছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদে তার ভাই সেলিম রেজাকে বসিয়ে বিদ্যালয়েত অর্থ আত্মসাত করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক এমপি সেলিম ওসমানের প্রভাব বিস্তার করে এলাকাবাসিকে জিম্মি করে বিদ্যালয়ের কমিটিতে তার ভাইকে রাখেন। কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি তাদের মধ্যে অন্যতম এম এ ওহাব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিনকে বাদ দিয়ে প্রতারক শহিদ রেজার ভাই সেলিম রেজাকে সভাপতি করেন। অথচ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাকালিন তাদের কোন অবদান নেই। কিন্তুবীর মুক্তিযোদ্ধা নিজাম উদ্দিনের দেয়া ৪৩ শতাংশ জায়গার উপর ভিত্তি করেই কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। যার শিক্ষার মান উন্নয়ন করার চেয়ে তারা লুটপাট করে বিদ্যালয়কে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায় প্রতারক শহিদ রেজা গংরা। তাছাড়া বিদ্যালয়ের পরিবেশ, লেখা পড়ার মান, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম করে অর্থ আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

তাছাড়া জায়গা জমি নিয়ে মানুষের সাথে নানা ভাবে ছলছাতুরি করে বেরান বলে প্রতারণা মামলার অভিযুক্ত আসামী শহির রেজার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। অথচ নিজেকে শিল্পপতি হিসেবে পরিচয় দেন তিনি। কিন্তু তিনি সদর বন্দরের মুর্তিমান আতঙ্ক ছিলেন। তাই তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তিার দাবী জানান ভুক্তভোগি গিয়াস উদ্দিন।

অপরদিকে মালার ৪২০ ধারা উল্লেখ্য রয়েছে, ধারা ৪২০ অনুযায়ী যদি কেউ প্রতারণার উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে অথবা প্রতারণার মাধ্যমে কারও সম্পত্তি বা অর্থ আত্মসাৎ করে, তবে তা এই ধারার অধীনে অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে।

সেই সাথে ধারা ৪২০ এর আওতায় অপরাধ প্রমাণিত হলে, অপরাধীর শাস্তি হতে পারে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড, জরিমানা, বা উভয়ই। অন্যদিকে পেনাল কোডের ধারা ৪০৬ অনুযায়ী, যদি কেউ কারও বিশ্বাসভঙ্গ করে এবং তার সম্পত্তি বা অর্থ আত্মসাৎ করে, তবে তা অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে।

Share.
Leave A Reply